মরণশীলতা ও প্রজননশীলতা বলতে কি বুঝ?

মরণশীলতা ও প্রজননশীলতা বলতে কি বুঝ? [NU- 2017, 18] ★★★

প্রজননশীলতা: সামাজিক জনবিজ্ঞানের আলোচনায় প্রজনন বা জন্মহার অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। প্রজনন নারীর বিশেষ ক্ষমতাকে নির্দেশ করে। অনেক সময় বলা হয়, নারী হলো সন্তানের উৎপাদনযন্ত্র। নারীর এ প্রজনন ক্ষমতা নির্ভর করে তার বয়সের উপর। কোন দেশের নারীরা অল্প বয়সে প্রজনন ক্ষমতা লাভ করে। আবার কোন কোন দেশের নারীরা প্রজনন ক্ষমতা লাভ করে বেশি বয়সে। সুতরাং প্রজনন ক্ষমতা নির্ভর করে কোন দেশের আবহাওয়ার উপর।

প্রামাণ্য সংজ্ঞা: সাধারণত ভাষায় প্রজনন হলো কোন নারী বা নারী সমষ্টি কর্তৃক প্রকৃত সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা। জনসংখ্যা বিজ্ঞানীদের মতে, একজন নারীর সন্তান প্রসবের সময়কাল হলো ১৫-৪৫ বা ৪৯ বছর এবং স্বাভাবিক নিয়মে একজন নারী এ সময় ১৫-২০টি সন্তান জন্ম দিতে পারে। জনসংখ্যার হ্রাস বা বৃদ্ধি নির্ণয় করে প্রজননশীলতা। মূলত জনগণের প্রকৃত সংখ্যা ও বৃদ্ধির উপর প্রভাব বিস্তারকারী মৌলিক উপাদান হলো প্রজননশীলতা। ইংরেজি শব্দ Fertility হলো প্রজননশীলতার প্রতিশব্দ।

আরো পড়ুন: গ্রামীণ সমাজের প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট

W.S Thompson and D.T. Lewis-এর মতে, “একটি নারী বা নারী গোষ্ঠীর প্রকৃত সন্তান উৎপন্ন সম্পাদন নিদের্শক হিসেবে সাধারণ প্রজনন প্রত্যয়টি ব্যবহৃত হয়।”

J.R.Weeks এর মতে, Fertility refers to the number of children born to women.

George W. Barelay প্রজনন পর্যালোচনার সংজ্ঞায় বলেন, “প্রজননের মূল ধারণা হলো জনসংখ্যায় কার্যকর একটি প্রকৃত স্তর যা জীবিত জনসংখ্যার উপর ভিত্তি নির্দেশক এবং জন্মের পরিসংখ্যান হতে প্রজননকে স্থির করতে পারে।”

পরিশেষে বলা যায় যে, কোনো নারী তার জীবিত অবস্থায় কয়টি জীবিত সন্তান জন্ম দেন তার পরিমাপই হলো প্রজনন বা প্রজননশীলতা। কোনো নির্দিষ্ট নারী গোষ্ঠীও যে জীবিত সন্তান জন্ম দেয় তাও প্রজননশীলতা। প্রজননশীলতার মাধ্যমে জনসংখ্যার প্রকৃতিতে পরিবর্তন ঘটে। অর্থাৎ জনসংখ্যার হ্রাস বা বৃদ্ধি ঘটতে পারে।

মরণশীলতা

‘মরণশীলতা’ প্রত্যয়টি জনবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ। ধর্মীয় দৃষ্টিতে বলা হয় মানুষ মরণশীল। জন্মগ্রহণ করলে একবার মরতে হবে। আবার বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয়, মানুষের একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর শরীরের তাপমাত্রা হ্রাস পেতে থাকে এবং শরীরের শক্তি কমে যায়। ফলে মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। 

মরণশীলতা প্রত্যয়টির সাথে জনসংখ্যার Size Composition এবং Change এর Population Research এর ক্ষেত্রে গুরুত্ব সহকারে আলোচিত হয়। অনেক সময় মরণশীলতা নির্ভর করে কোন দেশের জীবন যাত্রার মান ও ভৌগোলিক অবস্থার উপর।

প্রামাণ্য সংজ্ঞা: মরণশীলতা প্রত্যয়টির সাথে Death প্রত্যয়টি সম্পর্কিত। যখন কোন মানুষের জীবন নিঃশেষ হয়ে যায় তখন তাকে আমরা মৃত্যু বলতে পারি।

আরো পড়ুন: উপনিবেশবাদ কি?

World Health Organization এর সংজ্ঞা অনুযায়ী Death is the Permanent disappearence of a evidence of life at any time after birth has taken place cessation of vital functions without capacity of resuscitation.

পরিশেষে আমরা বলতে পারি, গর্ভপাত বা অন্য কোন কারণে মরণ, মরণশীলতা নয়। মরণশীলতা হলো প্রাকৃতিক নিয়মে জীবনের সমাপ্তি।

Shihabur Rahaman
Shihabur Rahaman
Articles: 8