সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা দাও

সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা দাও।

ভুমিকাঃ সমাজবিজ্ঞান এমন একটি শাস্ত্র যা মানুষের সমাজ, সামাজিক সম্পর্ক, এবং সমাজে মানুষের আচরণ ও প্রভাব সম্পর্কে অধ্যয়ন করে। এটি একটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির মাধ্যমে সমাজের গঠন, কার্যপ্রণালী এবং পরিবর্তনের বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে। সমাজবিজ্ঞানের মাধ্যমে সমাজে বিভিন্ন শ্রেণি, গোষ্ঠী, সংস্কৃতি এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ ও ভূমিকা বুঝতে সাহায্য করে।

শাব্দিকভাবে সমাজবিজ্ঞান জ্ঞানের সেই শাখা যা সাধারণীকরণ বা বিমূর্তায়ন পর্যায়ে সমাজ সম্পর্কে আলোচনা করে। সমাজবিজ্ঞান সামাজিক বিজ্ঞানসমূহের (রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতি, সমাজকল্যাণ, নৃ – বিজ্ঞান ইত্যাদি) অন্যতম যার প্রধান আলোচ্য বিষয় সমাজ। তাই সমাজের বিজ্ঞান হিসেবেই এর পরিচয়। মূলত সমাজে বসবাসকারী মানুষের পারস্পরিক যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে তা বিশ্লেষণ করার প্রয়োজন থেকেই সমাজবিজ্ঞানের উদ্ভব হয়েছিল।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা

সমাজবিজ্ঞান যে শাস্ত্র সমাজের মানুষের উৎপত্তি, ক্রমবিকাশ, আচার আচরণ , রীতিনীতি , ধ্যানধারণা প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করে তাকে সমাজবিজ্ঞান বলে।

শাব্দিক অর্থঃ ল্যাটিন শব্দ Socious এবং গ্রিক শব্দ Logos এর সমন্বয়ে ইংরেজি Sociology শব্দের উৎপত্তি। ‘Socious ‘ শব্দের অর্থ সমাজ আর ‘ Logos ‘ শব্দের অর্থ জ্ঞান। Sociology শব্দের অর্থ সমাজের জ্ঞান।

সমাজবিজ্ঞানের প্রামাণ্য সংজ্ঞা

আগাস্ট কম্ট (Auguste Comte): সমাজবিজ্ঞানের জনক হিসাবে পরিচিত। তিনি বলেন, “সমাজবিজ্ঞান হলো সমাজের গঠন, এর কার্যপ্রণালী এবং এর পরিবর্তন নিয়ে বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন।”

আরো পড়ুনঃ লাহোর প্রস্তাব কি?

ডুরখেইম এর মতে, “সমাজবিজ্ঞান হলো অনুষ্ঠান প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞান।”

ডেভিড ড্রেসলার তাঁর ‘Sociology ‘গ্রন্থে বলেছেন, “সমাজবিজ্ঞান হচ্ছে মানুষের পারস্পরিক ক্রিয়ার বিজ্ঞানসম্মত অধ্যয়ন। ”

আধুনিক সংজ্ঞা: বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী ম্যাকাইভার তাঁর ‘Society ‘গ্রন্থে বলেছেন, “সমাজবিজ্ঞানই একমাত্র বিজ্ঞান, যা সমাজ এবং সামাজিক সম্পর্ক বিষয়ে পাঠ করে। ”

ম্যাক্সওয়েবার এর মতে, “সমাজবিজ্ঞানের উদ্দেশ্য হলো সামাজিক কার্যাবলির অধ্যয়ন এবং সামাজিক কার্যাবলির মধ্যে একটি কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয়ে ব্যাখ্যাদান করা। ”

সর্বাধুনিক সংজ্ঞা: ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক নিল জে, স্পেনসার তাঁর ‘Sociology ‘ গ্রন্থে বলেছেন , “ সমাজবিজ্ঞান হচ্ছে এমন একটি অভিজ্ঞতা বা গবেষণানির্ভর বিজ্ঞান যা সমাজ এবং সামাজিক সম্পর্ক নিয়ে অধ্যয়ন করে। ”

আরো পড়ুনঃ অখণ্ড স্বাধীন বাংলা গঠনের পরিকল্পনা

উপসংহারঃ সমাজবিজ্ঞান হলাে সমাজ সম্পর্কিত বিজ্ঞানভিত্তিক বা বস্তুনিষ্ঠ অধ্যয়ন। ব্যক্তি এবং সমাজজীবনের পূর্ণাঙ্গ চিত্র এতে স্থান পেয়েছে, তাই এর বিষয়বস্তু অত্যন্ত ব্যাপক। সমাজের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় তথা মানুষের যাবতীয় মানবীয় আচরণ সম্পর্কে জানতে হলে সমাজবিজ্ঞান পাঠের গুরুত্ব অপরিসীম।

Sima Khatun
Sima Khatun

আমি সিমা খাতুন। আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স
কমপ্লিট করেছি। ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে আমার অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমি শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য সহজভাবে শেখাতে কাজ করি। শিক্ষার্থীদের সাহিত্যের প্রতি আগ্রহ বাড়ানোই আমার লক্ষ্য।

Articles: 128